শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৬ পূর্বাহ্ন
বাংলা নিউজডে ডেস্ক : করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশি চিকিৎসক রেজা চৌধুরী মারা গেছেন। বুধবার রাত ১১টা ৩০ মিনিটের দিকে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান তিনি।
জানা গেছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ বাংলাদেশি দেশটির লং আইল্যান্ডের নর্থ শোর ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। নিউইয়র্কের পার্কচেস্টার সাবওয়ে সংলগ্ন ১৯৫৭ ওয়েস্টচেস্টার এভিনিউতে তার চেম্বার ছিল।
তিনি এই দুর্যোগের সময়ও চেম্বারে নিয়মিত রোগীদের সেবা দিতেন। ড. রেজা সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞ। গত ২০ বছরেরও বেশি সময় নিউইয়র্কের ব্রঙ্কস শহরে নিয়মিত প্র্যাকটিস করতেন।
একইদিন যুক্তরাষ্ট্রে কৃষিবিদ শাহানা তালুকদার আখি নামে এক প্রবাসী বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। নিউউয়র্কের লং আইল্যান্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন তিনি। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের দপ্তর সম্পাদক কৃষিবিদ এম এম মিজানুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে বুধবার আরও চারজন প্রবাসী বাংলাদেশি মারা গেছে। তারা হলেন- আমেনা বেগম, আবদুস সামাদ, হারুনর রশিদ, কাজী আবু রাশেদ। এ নিয়ে দেশটিতে গত বুধবার রাত পর্যন্ত ৯৫ বাংলাদেশির করোনায় মৃত্যু হলো।
এ ছাড়া গত বুধবার রাত পর্যন্ত আরও ১৬ জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি ধরা পড়েছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ১১ ভারতীয়র মধ্যে ১০ জনই পুরুষ। বাকি একজন নারী। এ ছাড়া যারা মারা গেছে, তাদের মধ্যে ১০ জন নিউইয়র্ক এবং নিউ জার্সির। তাদের মধ্যে চারজন নিউইয়র্ক শহরের ট্যাক্সিচালক। একজন ফ্লোরিডার নাগরিক।
লকডাউন জারির আগে নিউইয়র্কে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবরে সবাই যখন আতঙ্কিত, তখনো প্রবাসীরা কোনো ধরনের সচেতনতা, প্রচার বা প্রস্তুতিতে যোগ দেননি। নিউইয়র্কে বাংলাদেশি সংগঠন আছে কয়েক’শ। সংগঠনগুলোর অনেকে করোনার প্রাদুর্ভাবের সময়ও একসঙ্গে নির্বাচনী প্রচার থেকে শুরু করে চায়ের আড্ডায়, রেস্তোরাঁয় বসে সভা-সমাবেশ করেছেন। ফলে এখন অনেকেই ভুলের মাশুল দিচ্ছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
লকডাউন শুরুর পর নিউইয়র্কে প্রধান প্রধান বাংলাদেশি মসজিদগুলো কার্যত বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপরও বেশ কিছু এলাকায় জামাতে নামাজ হয়েছে। তাবলিগসহ অন্যান্য ধর্মীয় সমাবেশ হয়েছে। এসব থেকে বাংলাদেশিদের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। আক্রান্ত লোকজনের মাধ্যমে নানাভাবে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় স্বদেশিদের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে হুহু করে বাড়তেছে আক্রান্তের সংখ্যা। ইতোমধ্যেই আক্রান্ত ৫ লাখ পার হয়ে গেছে (৫ লাখ ৫ হাজার ৪৭৮ জন)। একদিনেই দেশটিতে করোনা পজিটিভ তথা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ৩৫৫৭৯ জন।
মৃত্যুর হিসেবে একদিনের রেকর্ডটিও ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। ৯ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার একদিনে সর্বোচ্চ ১৯৭৩ জনের মৃত্যু দেখেছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশ। এবার সেই সংখ্যাতে ছাড়িয়ে গিয়ে ২ হাজার সংখ্যার মাইলফলক ছুঁলো পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশটি। গতকাল, ১০ এপ্রিল মৃত্যু বরণ করেছিল ১৪৪৩ জন।
মৃত্যুর দিক থেকে অচিরেই ইতালিকে ছাড়িযে যাবে যুক্তরাষ্ট্র। সব মিলিয়ে দেশটিতে মৃত্যু বরণ করেছে মোট ১৮ হাজার ৭৪৭ জনের। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ইতালিতে, ১৮ হাজার ৮৪৯ জনের।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত এবং মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে। এই প্রদেশটিতে সর্বশেষ একদিনেই মৃত্যু হয়েছে ৬৫১ জনের। নতুন আক্রান্ত ১০ হাজার ৫৭৫জন। এখানে সর্বমোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৭০ হাজার ৫১২ জন। সর্বমোট মৃত্যু ঘটেছে ৭ হাজার ৮৪৪ জনের।
নিউ ইয়র্কের প্রতিবেশি অঙ্গরাজ্য নিউ জার্সিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা। এই অঙ্গরাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৫৪ হাজার ৫৮৮। মৃত্যুর সংখ্যা সব মিলিয়ে ১৯৩২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু বরণ করেছে আরও ২২৫ জন।
তবে একদিনে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর রেকর্ডে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ফ্রান্স। গত বুধবার দেশটিতে একদিনেই মৃত্যুবরণ করেছে ১৪১৭ জন। সব মিলিয়ে বিশ্বব্যাপি করোনায় মৃত্যু ছাড়িয়ে গেছে ১ লাখ। সব মিলিয়ে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ২ হাজার ৭৪১জন।
আমেরিকা, বাংলাদেশ এবং বিশ্বের সর্বশেষ খবরের জন্য বাংলা নিউজডের ওয়েবসাইটে আসুন এবং আমাদের Bangla Newsday ফেসবুক পৃষ্ঠাটি সাবস্ক্রাইব করুন।